দশম শ্রেণীর ইতিহাস | পঞ্চম অধ্যায় | বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ | বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা প্রশ্ন ও উত্তর
দশম শ্রেণীর পঞ্চম অধ্যায় থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম যেগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং বিভিন্ন ইন্টার স্কুল টেস্ট এ প্রায় প্রতিবছর আসে।
এই অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিচে আলোচনা করা হলো।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
প্রশ্ন: -প্রথম বাংলা অক্ষরের নকশা নির্মাণ করেন কে ?
উত্তর: - প্রথম বাংলা অক্ষরের নকশা নির্মাণ করেন চার্লস উইলকিনস্ক।
প্রশ্ন: - বাংলার গুটেন বার্গ বলা হয় কাকে ?
উত্তর: - বাংলার গুটেনবার্গ বলা হয় চার্লস উইলকিনস্ক।
প্রশ্ন: - ছাপাখানা থেকে মুদ্রিত ভারতের প্রথম সংবাদপত্র কোনটি ?
উত্তর: - ছাপাখানা থেকে মুদ্রিত ভারতের প্রথম সংবাদপত্র টি হল বেঙ্গল গেজেট।
প্রশ্ন: - শ্রীরামপুর মিশনে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন কে ?
উত্তর: - শ্রীরামপুর মিশনে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন উইলিয়াম কেরি।
প্রশ্ন: - ছেনি কাটা বাংলা হরফ নির্মাণে চার্লস উইলকিনসকে সাহায্য করেছিলেন কে ?
উত্তর: - ছেনিকাটা বাংলা হরফ নির্মাণে চার্লস উইলকিনস কে সাহায্য করেছিলেন পঞ্চানন কর্মকার।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে গেলে সমস্ত প্রশ্ন mcq এক কথায় প্রকাশ সংক্ষিপ্ত ও রচনাধর্মী প্রশ্নগুলো কিভাবে লিখলে ভালো নম্বর পাওয়া যায় তার জন্য তোমরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারো আমরা অবশ্যই সাহায্য করবো।
প্রশ্ন: - মার্জিত বাংলা হরফের প্রথম কারিগর কে ছিলেন ?
উত্তর: - মার্জিত বাংলা হরফের প্রথম কারিগর ছিলেন পঞ্চানন কর্মকার।
প্রশ্ন: - শ্রীরামপুর মিশনারি থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাষায় প্রথম সংবাদপত্র কোনটি ?
উত্তর: - শ্রীরামপুর মিশনারি থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাষার প্রথম সংবাদপত্র টি হল সমাচার দর্পণ।
প্রশ্ন: - প্রথম সচিত্র বাংলা বইয়ের নাম কি ?
উত্তর: - প্রথম সচিত্র বাংলা বইয়ের নাম হল অন্নদামঙ্গল।
প্রশ্ন: - বসু বিজ্ঞান মন্দির কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
উত্তর: - বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন জগদীশচন্দ্র বসু।
প্রশ্ন: - অব্যক্ত গ্রন্থটির লেখক কে ?
উত্তর: - অব্যক্ত গ্রন্থটির লেখক হলেন জগদীশচন্দ্র বসু।
প্রশ্ন: - ক্রেস্কোগ্রাফ যন্ত্রটি কে আবিষ্কার করেন ?
উত্তর: - ক্রেস্কোগ্রাফ যন্ত্র কে আবিষ্কার করেন জগদীশচন্দ্র বসু।
প্রশ্ন: - জাতীয় বিজ্ঞান চর্চার জনক কাকে বলা হয়?
উত্তর: - জাতীয় বিজ্ঞান চর্চার জনক বলা হয় মহেন্দ্রলাল সরকারকে।
এই অধ্যায় mcq এবং অতি সংক্ষিপ্ত বা এককথায় প্রকাশ থেকে যে ধরনের প্রশ্ন আসে তার সমস্তটাই এখানে দেওয়া হল।
প্রশ্ন: - বিশ্বভারতী কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
উত্তর: - বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
প্রশ্ন: - বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে ?
উত্তর: - বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১৭ সালে ।
প্রশ্ন: - শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠিত হয় কত সালে ?
উত্তর: - ১৯০১ সালে শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন: - বিশ্বভারতীর প্রথম উপাচার্য কে ছিলেন ?
উত্তর: - বিশ্বভারতীর প্রথম উপাচার্য ছিলেন রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
প্রশ্ন: - ব্রহ্মচর্যাশ্রম বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন ?
উত্তর: - ব্রহ্মচর্যাশ্রম বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
প্রশ্ন: - কলকাতায় বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন কে ?
উত্তর: - কলকাতায় বিজ্ঞান কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়।
প্রশ্ন: - জাতীয় শিক্ষা পরিষদ শুরু হয় কত সালে ?
উত্তর: - জাতীয় শিক্ষা পরিষদ শুরু হয় ১৯০৬ সালে।
প্রশ্ন: - বেঙ্গল ন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন কে ?
উত্তর: - অরবিন্দ ঘোষ।
প্রশ্ন: - বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন কে ?
উত্তর: - সত্যেন্দ্রনাথ বসু বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্ন: - বেঙ্গল কেমিক্যাল এন্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস এর প্রতিষ্ঠাতা কে ?
উত্তর: - প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বেঙ্গল কেমিক্যাল ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস এর প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্ন: - পৃথিবীর প্রাচীনতম গ্রন্থটির নাম কি?
উত্তর: - পৃথিবীর প্রাচীনতম গ্রন্থটি হলো হীরক সূত্র।
প্রশ্ন: - প্রথম উল্লেখযোগ্য বাঙালি প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা কে ছিলেন?
উত্তর: - গঙ্গা কিশোর ভট্টাচার্য
প্রশ্ন: - ছাপাখানার জনক কাকে বলা হয়?
উত্তর: - জার্মানির জোহান্সের গুটেনবার্গ কে ছাপাখানার জনক বলা হয়।
প্রশ্ন: - ছেলেদের রামায়ণ বইটিতে বিভিন্ন ছবিগুলি অঙ্কন করেন কে ?
উত্তর: - উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।
প্রশ্ন: - উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী আধুনিক ফটোগ্রাফি ও মুদ্রণ শিল্প সম্পর্কে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য কাকে বিদেশে পাঠান?
উত্তর: - সুকুমার রায় কে।
প্রশ্ন: - হ্যালহেডের লেখা গ্রন্থটির নাম কি?
উত্তর: - হ্যালহেডের লেখা গ্রন্থটির নাম এ গ্রামার অফ দা বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ। গ্রন্থটি লেখা হয়েছিল ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে।
প্রশ্ন: - ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত একটি গ্রন্থের নাম কি?
উত্তর: - হিতোপদেশ
প্রশ্ন: - কবে বাংলায় পৃথিবীর মানচিত্র ছাপানো হয়?
উত্তর: - ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় পৃথিবীর মানচিত্র ছাপানো হয়েছিল।
প্রশ্ন: - বিদ্যাসাগর ও মদনমোহন তর্কালঙ্কার প্রতিষ্ঠিত ছাপাখানার নাম কি?
উত্তর: - সংস্কৃত যন্ত্র।
প্রশ্ন: - বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: - ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
প্রশ্ন: - কে প্রথম জাতীয় শিক্ষা কথাটি ব্যবহার করেছিলেন?
উত্তর: - প্রসন্নকুমার ঠাকুর প্রথম জাতীয় শিক্ষা কথাটি ব্যবহার করেছিলেন।
প্রশ্ন: - কারা কলকাতার বিজ্ঞান কলেজের জন্য জমি দান করেন?
উত্তর: - তারকনাথ পালিত ও রাজবিহারী ঘোষ কলকাতার বিজ্ঞান কলেজের জন্য জমি দান করেছিলেন।
প্রশ্ন: - বোলপুরে শান্তিনিকেতন আশ্রম কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর: - মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বোলপুরে শান্তিনিকেতন আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্ন: - লাইনো টাইপ এর নির্মাতা ছিলেন কে?
উত্তর: - সুরেশ চন্দ্র মজুমদার লাইনো টাইপের নির্মাতা ছিলেন।
প্রশ্ন: - পর্তুগিজ স্থাপিত প্রথম ছাপাখানা কোথায় নির্মাণ করা হয়েছিল?
উত্তর: - গোয়াতে।
প্রশ্ন: - পূর্ববঙ্গের প্রথম ছাপাখানা কোথায় স্থাপন করা হয়েছিল?
উত্তর: - রংপুর।
প্রশ্ন: - ব্যাপটিস্ট মিশন কোথায় স্থাপন করা হয়েছিল ?
উত্তর: - শ্রীরামপুরে।
প্রশ্ন: -
উত্তর: -
প্রশ্ন: -
উত্তর: -
২. উইলিয়াম কেরি বিখ্যাত কেন?
উঃ উইলিয়াম কেরি ছিলেন শ্রীরামপুরের একজন খ্রিস্টান মিশনারি। তিনি 1800 খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে একটি আধুনিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে তিনি বাংলার বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।
3. শিক্ষার প্রসারে শ্রীরামপুর ছাপাখানার অবদান কী?
উঃ শিক্ষার প্রসারে 1800 খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম কেরি প্রতিষ্ঠিত শ্রীরামপুর ছাপাখানার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। এখানে সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান, সমাজসংস্কার প্রভৃতি বিষয়ে বইপত্র ছাপা হতো। বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রসারে এই ছাপাখানার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
4. ছাপা বই শিক্ষার প্রসারে কী ভূমিকা নিয়েছিল?
উঃ ছাপা বইয়ের মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার সুলভ হয়েছিল। ছাপাখানায় মুদ্রিত বিপুল সংখ্যক বই অল্প সময়ে পাঠক ও শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যেত। ছাপাখানায় মুদ্রিত বইয়ের মূল্য হাতে লেখা বইয়ের তুলনায় কম হওয়ায় দরিদ্র ও সাধারণ পড়ুয়ারা ছাপাখানার বইপত্র কিনতে সক্ষম হয় এবং ছাপা বই হাতে লেখা বইয়ের তুলনায় সহজপাঠ্য। ফলে শিক্ষাবিস্তারে নতুন স্কুল ও ছাপা বই পরিপূরক হিসেবে কাজ করেছিল।
5. ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কীভাবে বাংলা মুদ্রণশিল্পে গতি এনেছিল?
উঃ প্রশাসনিক প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সিভিলিয়ানদের ইংরেজির পাশাপাশি দেশীয় ভাষাতেও শিক্ষাদান করা হতো। তাই এইরকম শিক্ষাদানের জন্য বাংলায় মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজনীয়তা থেকেই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ শ্রীরামপুর মিশনের ছাপাখানাসহ সংস্কৃত প্রেস, হিন্দুস্থানি প্রেস-এ ছাপার বরাত দিত। এভাবে বাংলা মুদ্রণশিল্পে গতির সৃষ্টি হয়।
6. হিকিজ বেঙ্গল গেজেট কী?
উঃ ছাপাখানার উদ্ভবের ফলে বাংলায় সংবাদপত্রের যুগের সুচনা হয়েছিল যার ফলশ্রুতি ছিল 'হিকিজ বেঙ্গল গেজেট' প্রকাশ। এটি কোম্পানির প্রেস থেকে ছাপা হতো। এটি ছিল জেমস অগাস্টাস হিকির দ্বারা সম্পাদিত সাপ্তাহিক সংবাদপত্র (1780 খ্রিস্টাব্দ)।
7. ছাপাখানার প্রসারে স্কুল বুক সোসাইটি বিখ্যাত কেন?
উঃ ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত (1817 খ্রিস্টাব্দ) স্কুল বুক সোসাইটির উদ্দেশ্য ছিল অল্প খরচে শিশু ও শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা। ডেভিড হেয়ার আমৃত্যু বাংলা পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজে ব্রতী ছিলেন। এই সোসাইটি নিজের ছাপাখানার পাশাপাশি শ্রীরামপুর মিশন প্রেসসহ অন্যান্য প্রেসেও বই ছাপানোর ব্যবস্থা করেছিল।
৪. ছাপাখানার ইতিহাসে বিদ্যাসাগরের নাম স্মরণীয় কেন?
উঃ সংস্কৃত কলেজে চাকুরিকালীন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মদনমোহন তর্কালঙ্কারের সঙ্গে
একযোগে ‘সংস্কৃত যন্ত্র’ নামে এক মুদ্রণযন্ত্র স্থাপন করেন। তাঁদের উদ্দেশ্যে যে, নিজেদের লেখা ও মতামত, পছন্দের পুস্তক মুদ্রণ এবং সেগুলি প্রকাশের মাধ্যমে সর্বাঙ্গীণ শিক্ষার বিস্তার করা। শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্যে বিদ্যাসাগর বাংলা বর্ণমালা সংস্কারের পরিচয় দেন তাঁর দুখণ্ডে প্রকাশিত বর্ণপরিচয় (1855 খ্রিস্টাব্দ) পুস্তিকায়। এর থেকে জানা যায় যে, তিনি পূর্ববর্তী 16 (স্বরবর্ণ) + 34 (ব্যাঞ্জনবর্ণ) = 50টি বর্ণের পরিবর্তে 12 (স্বরবর্ণ) + 40 (ব্যাঞ্জনবর্ণ) = 52টি বর্ণের প্রস্তাব দেন। এইভাবে বাংলা মুদ্রণে বিদ্যাসাগর সার্ট তৈরি হয়।
9. ছাপাখানার জগতে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী বিখ্যাত কেন?
উত্তর: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী (1863-1915 খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন একজন খ্যাতনামা শিশুসাহিত্যিক, চিত্রকর, প্রকাশক এবং বাংলার ছাপাখানার অগ্রপথিক। তিনি কলকাতার ইউ. এন. রায় অ্যান্ড সন্স নামে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করে মুদ্রণশিল্পের উন্নতির বিষয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তিনি 'সন্দেশ', 'ছেলেদের রামায়ণ', 'ছেলেদের মহাভারত'। প্রভৃতি বই প্রকাশ করেন এবং ছাপাখানার জন্য বিভিন্ন নতুন ও উন্নত পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন।
10. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী মুদ্রণশিল্পের উন্নতির জন্য কী কী যন্ত্র উদ্ভাবন করেন?
উত্তর: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী মুদ্রণশিল্পের উন্নতির জন্য নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নানা
যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। তিনি অন্ধকার ঘরে বসে আলোর প্রতিফলন ও প্রতিসরণ লক্ষ করে হাফটোন ব্লক তৈরির সূত্র উদ্ভাবন করেন। এছাড়া সম্পূর্ণ দেশীয় উপাদানে গবেষণা করে ডায়াফ্রাম যন্ত্র, স্ক্রিন অ্যাডজাস্টার যন্ত্র, ডুয়োটাইপ, রিপ্রিন্ট, টিন্ট প্রসেস পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন।
11. ইউ. এন. রায় অ্যান্ড সন্স বলতে কী বোঝো?
উত্তর: উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা সংস্থার নাম হল ইউ.এন. রায় অ্যান্ড সন্স। বিদেশি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এখানে ছাপার উন্নত ধরনের হাফটোন ব্লকে ছাপা হতো। তিন-চার রকম রং ব্যবহার করে ছোটোদের জন্য মজার বই প্রকাশ করা ছিল এই প্রকাশনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
12. জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কীভাবে গঠিত হয়েছিল?
উত্তর: লর্ড কার্জন কর্তৃক 1904 খ্রিস্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয় আইন, কার্লাইল সার্কুলার আইন (1905 খ্রিস্টাব্দ) এবং 1905 খ্রিস্টাব্দের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে বাংলায় গড়ে ওঠে এক বিশাল জাতীয়তাবাদী শিক্ষা, 1905 খ্রিস্টাব্দে 16 নভেম্বর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অরবিন্দ ঘোষ, রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিক প্রমুখের উদ্যোগে এক শিক্ষা সম্মেলন 'জাতীয় শিক্ষা পরিষদ' গঠনের বিষয়টি পাকাপাকি হয়। 1906 খ্রিস্টাব্দে। জুন জাতীয় শিক্ষা পরিষদ রেজিস্ট্রিকৃত হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে রাসবিহারী ঘোষের সভাপতিত্বে 1906 খ্রিস্টাব্দের 14 আগস্ট জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয়।
13. জাতীয় শিক্ষা বলতে কী বোঝো?
উত্তর: লর্ড কার্জন 1905 খ্রিস্টাব্দে বাংলাকে বিভাজিত করলে এর বিরুদ্ধে স্বদেশি আন্দোলন শুরু হয়। এই সময় বাংলায় বিদেশি শিক্ষাব্যবস্থা বর্জন করে এর বিকল্প হিসেবে স্বদেশি শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের যে উদ্যোগ নেওয়া হয় তা জাতীয় শিক্ষা নামে পরিচিত।
14. কে, কবে বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর: খ্যাতনামা বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসু 1917 খ্রিস্টাব্দে কলকাতার বসু বিজ্ঞান মন্দির বা বোস ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। বসু বিজ্ঞান মন্দিরে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশ বিজ্ঞান প্রভৃতি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশ্বমানের গবেষণা হতো।
15. মহেন্দ্রলাল সরকার কে ছিলেন?
উঃ ড. মহেন্দ্রলাল সরকার ( 1833-1904 খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন ভারতের দ্বিতীয় এম. ডি এবং খ্যাতনামা প্রথম হোমিও চিকিৎসক। তিনি 1876 খ্রিস্টাব্দের 29 জুলাই কলকাতার বৌবাজার স্ট্রিটে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কাল্টিভেশন অব সায়েন্স বা IACS প্রতিষ্ঠা করেন।
16. বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়? এর অধ্যক্ষ কে ছিলেন?
উঃ 1906 খ্রিস্টাব্দের 15 আগস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ।
17. সি. ভি. রমন বিখ্যাত কেন?
উত্তর: স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন কলকাতা বিজ্ঞান কলেজে শিক্ষাদান করতে আসেন। তিনি ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কাল্টিভেশন অব সায়েন্স'-এ গবেষণার কাজ করেন। এখানে গবেষণা করে বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন তাঁর বিখ্যাত 'রমন ক্রিয়া' (রমন এফেক্ট) আবিষ্কার করেন। 1930 খ্রিস্টাব্দে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
18. ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার দুটি ত্রুটি উল্লেখ করো।
উত্তর: ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার দুটি ত্রুটি হল- (i) ঔপনিবেশিক তথা পাশ্চাত্য শিক্ষার মাধ্যম ছিল ইংরেজি ভাষা যা আয়ত্ত করা সমাজের বৃহৎ অংশের মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব ছিল। (ii) শিক্ষিত উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত হিন্দু পরিবারের পুরুষরাই পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের সর্বাধিক সুবিধা ভোগ করেছিল। মুসলিম সমাজ বা নারীসমাজ শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অবহেলিত ছিল।
19. শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উঃ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য একটি শাখা শ্রীনিকেতন, গ্রামোন্নয়ন বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের নানা ভাবনাচিন্তার সংগঠিত রূপ। এই প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন প্রকার ব্যাবহারিক শিক্ষাদান, যেমন- কৃষি, গো-পালন, কুঠির শিল্প, স্বাস্থ্য, সমবায় ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রামীণ সমাজকে স্বনির্ভর করা ও সার্বিক উন্নয়ন ঘটানো। এই কাজে তাঁর প্রধান সহায়ক ছিলেন এলমহার্স্ট ও কালীমোহন ঘোষ।
20. উনিশ শতকে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স'-এর ভূমিকা কী ছিল?
উঃ উনিশ শতকে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশের জন্য মহেন্দ্রলাল সরকার 1876 খ্রিস্টাব্দে “ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স' প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিজ্ঞান কেন্দ্রে সম্পূর্ণ নিজের তত্ত্বাবধানে স্বাধীনভাবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে মৌলিক গবেষণার ব্যবস্থা করা হয় ও বিজ্ঞান বিষয়ক বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞান চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে তোলা হয়।
21. 'বিশ্বভারতী' প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল ?
উত্তর: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 1921 সালে বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে স্নিগ্ধ পল্লি প্রকৃতির বুকে বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল প্রাচীন ভারতীয় আশ্রমিক শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষাচেতনার সম্মিলন; শিক্ষার্থীর জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ সাধন করা, শিক্ষার সঙ্গে প্রকৃতি ও মানুষের সমন্বয় গড়ে তোলা, আদর্শ শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার মৌলিক নীতি রূপ স্বাধীনতা, সৃজনশীলতার বিকাশ।
এই অধ্যায়ের বাকি বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন এবং ব্যাখ্যা মূলক প্রশ্ন গুলি খুব শীঘ্রই আপলোড করা হবে