আগ্নেয় শিলা কাকে বলে? এই শিলার বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণীবিভাগ আলোচনা কর।
Definition of Igneous Rocks. Characteristics and classification of Igneous Rocks
আগ্নেয় শিলা কাকে বলে এর বৈশিষ্ট্য ও শ্রেণীবিভাগ |
আগ্নেয় শিলা কাকে বলে?
ল্যাটিন শব্দ ignis এর অর্থ হলো অগ্নি। ভূগর্ভে উত্তপ্ত আগ্নেয় পদার্থ ম্যাগমা এবং ভূপৃষ্ঠের উত্তপ্ত লাভা জমাট বেঁধে যে শিলা সৃষ্টি করে তাকে বলা হয় আগ্নেয়শিলা বা প্রাথমিক শিলা।
পৃথিবী সৃষ্টির আদি পর্যায়ে গলিত আগ্নেয় পদার্থ সমূহ বা ম্যাগমা ধীরে ধীরে তাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হয় এবং জমাট বেঁধে আগ্নেয় শিলা সৃষ্টি করে। পরবর্তীকালে ভূত্বকের বিভিন্ন ছোট বড় ফাটল ও আগ্নেয়গিরির মুখ থেকে দিয়ে উত্তপ্ত তরল লাভা বেরিয়ে এসে ভূপৃষ্ঠে জমা হয় এবং কালক্রমে তা ঠান্ডা ও শক্ত হয়ে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে।
T. Earther এর মতে,
'The igneous rocks are those which have solidified from a molten condition."
আগ্নেয় শিলার বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
ভূ অভ্যন্তরের উত্তপ্ত আগ্নেয়া পদার্থ ম্যাগমা এবং ভূপৃষ্ঠে উত্তপ্ত লাভা জমাট বেঁধে যে জেলা সৃষ্টি হয়েছে তাকে আগ্নেয়শিলা বলে । এই প্রকার আগ্নেয় শিলার প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি নিচে পরপর আলোচনা করা হলো,-
- কাঠিন্যতা অর্থাৎ অন্যান্য যে কোন শিলা অপেক্ষা আগ্নেয় শিলার কাঠিন্য বেশি।
- কেলাস অর্থাৎ এতে জল প্রবেশ করতে পারে না কারণ এতে কেলাস থাকে।
- অস্তরীভূত শিলা অর্থাৎ এই শিলার মধ্যে কোন স্তর থাকে না বলে এই শীলাকে অস্তরীভূত শিলা বলা হয়।
- বুননের দিক থেকে এই শিলার যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে কোন শিলার দানা অতি সূক্ষ্ম আবার কোনোটি বড় ও কোনটির ক্ষেত্রে দানার পরিবর্তে কাঁচের মতো বুনন লক্ষ্য করা যায়।
- জীবাশ্মহীন অর্থাৎ যেহেতু এই শিলা স্তরে স্তরে গঠিত হয় না তার ফলে শিলাতে কোন প্রকার জীবাশ্ম লক্ষ্য করা যায় না।
- আগ্নেয় শিলা ক্ষারধর্মী বা অম্লধর্মী দুই প্রকারী হতে পারে।
- স্ফটিক উপস্থিতি অর্থাৎ আগ্নেয়শিলা প্রচন্ড উত্তপ্ত অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয় বলে এতে স্বচ্ছ কাঁচের মতো স্ফটিক লক্ষ্য করা যায়।
- উপাদান অর্থাৎ এই শিলার উপাদান গুলি সূক্ষ্ম ও ঘন সন্নিবেশষ্ট হয়।
- আবির্ভাব অর্থাৎ এই শিলার সর্বপ্রথম এসেছিল বললে এর আরেক নাম আদিশীলা বা প্রাথমিক শিলা।
- প্রকৃতি এই শিলা প্রচন্ড শক্ত ভারী সহজে ক্ষয় হয় না বা ভাঙা যায় না।
- বিস্তৃতি অর্থাৎ পৃথিবীর প্রাচীন ভূখণ্ড গুলি সাধারণত আগ্নেয় শিলা দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে।
- আকৃতি অর্থাৎ আগ্নেয়শিলায় গ্রানাইট শিলা স্তূপ গোলাকার এবং ব্যাসল্ট শিলা স্তূপ চ্যাপ্টা আকৃতির হয়।
- অন্য শিলার মিশ্রণ আগ্নেয় শিলার সাথে অনেক সময় পাললিক শিলা ও রূপান্তরিত শিলা লক্ষ্য করা যায়।
- খনিজের অবস্থান অর্থাৎ এই শিলার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের খনিজ দ্রব্য পাওয়া যায় যেমন কোয়ার্জাইট ,ফেলস্পার ,হর্ন বেল্ট প্রভৃতি।
আগ্নেয় শিলার বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে পরীক্ষার সময় যদি জানতে চাওয়া হয় তাহলে তোমরা কমপক্ষে পাঁচ থেকে সাতটি ইম্পরট্যান্ট দেখে করে রাখবে। আর এম সি কিউ বা অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন এর জন্য সমস্ত পয়েন্টগুলি খুব ইম্পরট্যান্ট ।
আগ্নেয় শিলার শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করো।
পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে যে সমস্ত আদিবাসীরা লক্ষ্য করা যায় তাদের উৎপত্তি রাসায়নিক ধর্ম খনিজ সংযুক্তি বুনন প্রভেটের উপর ভিত্তি করে আগ্নেয় শিলার শ্রেণীবিভাগ করা হয়।
উত্তপ্ত গলিত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে এসে শীতল ও কঠিন হয়ে এই আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করেছে।
উৎপত্তি অনুসারে আগ্নেয় শিলাকে প্রধান দুই ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল যথাক্রমে নি:সারি আগ্নেয় শিলা এবং উদবেধী আগ্নেয় শিলা।