WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সালোকসংশ্লেষ কাকে বলে ? সালোকসংশ্লেষের প্রধান উৎস ,গুরুত্ব ও তাৎপর্য আলোচনা করো। ( Photosynthesis origin and importance)

সালোকসংশ্লেষ কাকে বলে ? সালোকসংশ্লেষের প্রধান উৎস ,গুরুত্ব ও তাৎপর্য আলোচনা করো।

সালোকসংশ্লেষ কাকে বলে ? সালোকসংশ্লেষের প্রধান উৎস ,গুরুত্বতাৎপর্য আলোচনা করো। 


এই সৌরজগতের মধ্যে একমাত্র পৃথিবীতেই প্রাণের অস্তিত্ব বর্তমান। পৃথিবীতে যাদের মধ্যে প্রাণের অস্তিত্ব বর্তমান তাদের জীব বলে। প্রাণের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য প্রত্যেক জীবের প্রয়োজন শক্তির। পৃথিবীতে এই শক্তির মূল উৎস হল সূর্যালোক। একমাত্র ক্লোরোফিলযুক্ত সজীব কোশই খাদ্য তৈরির সময় সূর্যালোক থেকে প্রাপ্ত আলোকশত্ত্বিকে খাদ্যের মধ্যে স্থৈতিক শক্তিরূপে আবদ্ধ করতে পারে। ক্লোরোফিলযুক্ত সঞ্জীব কোশ যে প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তিকে খাদ্যের মধ্যে স্থৈতিক শক্তিরূপে আবদ্ধ করতে পারে তাকে সালোকসংশ্লেষ বলে।


• সালোকসংশ্লেষ (Photosynthesis) শব্দটির অর্থ : সালোকসংশ্লেষ বা ফটোসিন্থেসিস শব্দটি দুটি গ্রিক শব্দ ফোর্টস (Photos) অর্থাৎ আলো এবং সিন্থেসিস (Synthesis) অর্থাৎ সংশ্লেষ শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত। অর্থাৎ সালোকসংশ্লেষ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ আলোর উপস্থিতিতে (স + আলোক) কোন কিছুর সংশ্লেষ। 1898 খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানী বার্নেস প্রথম ফটোসিন্ৎেসিস বা সালোকসংশ্লেষ শব্দটি প্রচলন করেন। প্রকৃতিতে অক্সিজেনিক সালোকসংশ্লেষ আনুমানিক প্রায় 3.5 বিলিয়ন বছর আগে প্রথম নীলাভ সবুজ শৈবালে দেখা গিয়েছিল।


• সালোকসংশ্লেষের সংজ্ঞা (Definition of Photosynthesis) :


যে জটিল জৈবিক প্রক্রিয়ায় ক্লোরোফিলযুক্ত সজীব কোশ নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোকশক্তি (প্রধানত সূর্যালোক)-র উপস্থিতিতে ক্লোরোফিলের সাহায্যে পরিবেশ থেকে শোষিত জল ও কার্বন-ডাই অক্সাইডের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সরল তরল শর্করা জাতীয় খাদ্য (মুখ্যত গ্লুকোজ) উৎপন্ন করে এবং উৎপন্ন গৃহীত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সমঅণু অক্সিজেন ও জল উপজাত পদার্থরূপে ত্যাগ করে তাকে সালোকসংশ্লেষ বা ফটোসিন্থেসিস বলে।


সালোকসংশ্লেষ সংজ্ঞাটির বিশ্লেষণ :


(i) সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াটি জটিল জৈব রাসায়নিক বিক্রি। (ii) এই প্রকি শুধুমাত্র ক্লোরোফিলযুক্ত সজীব কোশেই হয়। (iii) সালোক সংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় প্রধান তিনটি বাহ্যিক উপাদান- আলোকশক্তি (সুর্যালোক), জল, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং একটি আভ্যন্তরীণ উপাদান ক্লোরোফিলের একান্ত প্রয়োজন। (iv) এই প্রক্রিয়ায় সরল তরল শর্করা (মুখ্যত গ্লুকোজ) উৎপন্না হয়। (v) এই প্রক্রিয়ায় আলোকশক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে খাদো আবদ্ধ হয়। (vi) সালোক সংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় উপজাত পদার্থরূপে অক্সিজেন এবং জল উৎপন্ন হয় অর্থাৎ পরিবেশের অক্সিজেনের উৎস হল সালোক সংশ্লেষ।




সালোকসংশ্লেষ একরকমের উপচিতি বিপাক (Photosynthesis is ananabolic metabolism) :


যে বিপাক ক্রিয়ায় সরল যৌগ জটিল যৌগে পরিণত হওয়ায় জীবের শুষ্ক ওজন বৃদ্ধি পায়, তাকে উপচিতি বিপাক বলে।


সালোকসংশ্লেষ বা ফটোসিন্থেসিস প্রক্রিয়ায় সরল যৌগ জল এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড


থেকে অপেক্ষাকৃত জটিল যৌগ শর্করা (মুখ্যত গ্লুকোজ) গঠিত হওয়ায় উদ্ভিদের শুদ্ধ


ওজন বৃদ্ধি পায়, তাই সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াকে উপচিতি বিপাক বলে।


শুষ্ক ওজন—জীবিত বা সদ্যো মৃত জীবদেহকে 75°C তাপমাত্রায় 24 ঘন্টা রাখলে ঐ জীবদেহের যে ওজন পাওয়া যায় তাকে শুষ্ক ওজন বলে।


সালোকসংশ্লেষ একটি অঙ্গার আত্তীকরণ প্রক্রিয়া-


পরিবেশের CO, থেকে কোশ্য যৌগে কার্বনের অঙ্গীভূত হওয়াকে অজ্ঞান আত্তীকরণ বলে।


সালোকসংশ্লেষ পক্রিয়ায় পরিবেশ থেকে গৃহীত কার্বন ডাই অক্সাইডের কার্বন বা অঙ্গার শর্করা (মুখ্যত গ্লুকোজ) গঠনের জন্য ব্যবহৃত হয়, অর্থাৎ এক্ষেত্রেও পরিবেশের কার্বন ডাইঅক্সাইড থেকে কার্বন কোশ্য যৌগে অঙ্গীভূত হয়, তাই সালোকসংশ্লেষকে অপার প্রাতীকরণ বলে।


. সালোকসংশ্লেষ একটি জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়া :- সালোকসংশ্লেষ একটি জটিল জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া। এই বিক্রিয়ায় জল বিশ্লিষ্টহয়ে H' নির্গত করে এবং অক্সিজেন উৎপন্ন করে অর্থাৎ জল জারিত হয়। জল থেকে নির্গত H, CO, কে বিজারিত করে সরল শর্করা উৎপন্ন করে। এইজন্য সালোকসংশ্লেষকে জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়া বলে।


• সালোকসংশ্লেষের রাসায়নিক সমীকরণ


রুবেন এবং ক্যামেন (1941) অক্সিজেনের তেজস্ক্রিয় আইসোটোপযুক্ত জল ব্যবহার করে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াটি করেন এবং এই প্রক্রিয়ার নির্ভুল রাসায়ানিক সমীকরণ দেন।

সালোকসংশ্লেষের রাসায়নিক সমীকরণের ব্যাখ্যা :


সালোকসংশ্লেষের রাসায়নিক সমীকরণ থেকে নিম্নলিখিত তথ্যগুলি জানা যায়- সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2), জল (H O), সূর্যালোক এবং ক্লোরোফিল প্রধান উপাদান। এই প্রক্রিয়ায় সূর্যালোক এবং ক্লোরোফিলের উপস্থিতিতে 6 অণু (11) >


+ (1)


কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং 12 অণু জলের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায়। অণু


গ্লুকোজ, 6 অণু জল এবং 6 অণু অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। * (iii) এই প্রক্রিয়ায় গৃহীত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সমঅণু পরিমাণ অক্সিজেন নির্গত হয় এবং এই অক্সিজেনের উৎস জল।


* (iv) সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া কোশের ক্লোরোপ্লাস্টে হয় কারণ ক্লোরোফিল ও অন্যান্য


সহায়ক রঞ্জক পদার্থ ক্লোরোপ্লাস্টে থাকে। * (v) এই প্রক্রিয়ায় আলোকশক্তি ক্লোরোফিলের সাহায্যে স্পৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়ে গ্লুকোজে আবদ্ধ হয়। এক গ্রাম অণু গ্লুকোজ 686 কিলোক্যালরী স্থৈতিক


শক্তিরূপে আবদ্ধ থাকে। 

(vi) সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় 264 গ্রাম CO, এবং 216 গ্রাম HO-এর মধ্যে


রাসায়নিক বিক্রিয়ায় 180 গ্রাম গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। * (vii) পরিবেশের CO-এর কার্বন এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্লুকোজে আবদ্ধ হয়। * (viii) এই প্রক্রিয়ায় গৃহীত জল জারিত হয় এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড বিজারিত


হয়।


* (ix) এই প্রক্রিয়ায় বিক্রিয়াজাত পদার্থরূপে গ্লুকোজ এবং উপজাত পদার্থরূপে জন


ও অক্সিজেন উৎপন্ন হয়।


সালোকসংশ্লেষের উপাদান :


H.O


সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় উপাদানগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।


*(ক) প্রধান উপাদান : সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় জল, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, আলোক (সূর্যালোক) এবং


ক্লোরোফিল প্রধান উপাদানরূপে ব্যবহৃত হয়। (খ) সাহায্যকারী উপাদানঃ


অ্যাডিনোসিন ভাই ফসফেট (ADP), নিকোটিনামাইড অ্যাডেনিন ডাই নিউক্লিওটাইড ফসফেট (NADP) এবং রাইবিউলোস বিস ফসফেট (RoBp) এবং কয়েকটি উৎসেচক ও সহ উৎসেচক প্রভৃতি পদার্থ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার সাহায্যকারী উপাদানরূপে ব্যবহৃত হয়।


সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার প্রধান উপাদানগুলির উৎস এবং গুরুত্ব


(1) জन (HO) : জল সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় কাঁচামাল (Raw material) রূপে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত শোষিত জলের এক শতাংশের কম অংশ এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয়। এক অণু গ্লুকোজ তৈরির জন্য 12 অণু জলের প্রয়োজন। • ফ্রষ্টব্য : বর্তমানে রাইবিউলোজ ভাই ফসফেটকে রাইবিউলোজ নিম ফসফেট বলে।



(Source) : 0


* (i) স্থলজ উদ্ভিদের ক্ষেত্রে জলের উৎস মাটির কৈশিক জল। এই জল স্থলজ উদ্ভিদ মূলের মূলরোম অংশ নিয়ে ইমবাইবিশন, ব্যাপন এবং অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শোষণ করে।


(ii) জলজ উদ্ভিদের ক্ষেত্রে জলের উৎস হল পারিপার্শ্বিক জলজ পরিবেশ। অর্ধনিমজ্জিত উদ্ভিদ মূল এবং জলে নিমজ্জিত অংশ দ্বারা ব্যাপন ও অভিস্রবণ - প্রক্রিয়ায় জল শোষণ করে। সম্পূর্ণ নিমজ্জিত উদ্ভিদ সমগ্র দেহ দ্বারা ব্যাপন ও অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় জল শোষণ করে।


* (iii) রান্না, অর্কিজ জাতীয় পরাশ্রয়ী উদ্ভিদের ক্ষেত্রে জলের উৎস হল বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প। এইসকল উদ্ভিদ বায়বীয় মূলের ভেলামেন নামক স্পখী আবরণের সাহায্যে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প শোষণ করে।


● // ভূমিকা


ফটোলাইসিস বা আলোকবিশ্লেষণের ফলে জল বিশ্লিষ্ট হয়ে H+ এবং Og উৎপন্ন করে। H" আয়ন NADP-কে বিজারিত করে NADPH, গঠন করে, এই NADPH,-র হাইড্রোজেন CO-কে বিজারিত করে গ্লুকোজ গঠন করে। জল বিশ্লেষণের ফলে উৎপন্ন, ইলেকট্রন (c) ক্লোরোফিলের ইলেকট্রন শূন্যতা + (11)


পূরণ করে।


+(1)


সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় উপজাত পদার্থরূপে উৎপন্ন অক্সিজেনের (O) উৎস হল জল। (II) কার্বন-ডাই-অক্সাইড : সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় কাঁচামাল (Raw


material) হল কার্বন-ডাই-অক্সাইড। এই প্রক্রিয়ায় ছয় অণু কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সাহায্যে এক অণু গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়।


উত্স (Source) :


* (i) স্থলজ উদ্ভিদ এবং পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ বায়ুমণ্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড পত্ররন্ধ্রের


মাধ্যমে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করে। জলে অর্ধনিমজ্জিত উদ্ভিদ পত্ররন্দ্র নিয়ে বায়ুমণ্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং নিমজ্জিত অংশের মাধ্যমে জ্বলে দ্রবীভূত কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বোনেট এবং বাই-কার্বোনেট যৌগ ব্যাপন প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করে। * (ii)


0 (ii) জলে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত উদ্ভিদ সমগ্র দেহতলের মাধ্যমে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় জলে দ্রবীভূত কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বোনেট এবং বাইকার্বোনেট যৌগ গ্রহণ করে। কার্বোনেট এবং বাইকার্বোনেটের যৌগগুলি দেহে ভেঙে গিয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন করে.


গুরুত্ব / ভূমিকা


+ (1) কার্বন-ডাই-অক্সাইড NADPH, দ্বারা বিজারিত হয়ে গ্লুকোজ গঠন করে। ক(ii) কার্বন ডাই অক্সাইডের অর্জন এবং অক্সিজেন গ্লুকোজের উপাদানরূপে আবদ্ধ হয়। (III) আলোক (সূর্যালোক ) সালোক সংশ্লেষ একটি আলোক নির্ভর প্রক্রিয়া। সেইজন্য আলোক এই প্রক্রিয়ার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সবুজ পাতায় আপতিত সূর্যালোকের 83% শোষিত হয়, 12% প্রতিফলিত হয়, 5% প্রতিমূত হয়। পাতায় শোষিত সূর্যালোকের 0.5-35% সালোকসংশ্লেষে ব্যবহৃত হয়।


উৎস (Source):


প্রকৃতিতে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোর প্রধান উৎস হল সূর্যালোক। ক্লোরোফিলযুক্ত সজীব কোশ সূর্যালোকের অদৃশ্য উচ্চ তড়িত চুম্বকীয় কণা বা ফোটন কণা শোষণ করে।


সূর্যালোক সাতটি বর্ণের আলোর সমন্বয়—বেগুনি, নীল, আকাশি-নীল, সবুজ, কমলা, লাল বর্ণালীবীক্ষন যন্ত্রের সাহায্যে জানা গেছে লাল আলোতে ( 650-700nm তরঙ্গদৈর্ঘ্য) সালোকসংশ্লেষের হার সব থেকে বেশি এবং নীল আলোতে (430- 470nm) সালোকসংশ্লেষের হার মাঝামাঝি। সেইজন্য লাল এবং নীল বর্ণের আলোমটিকে সালোকসংশ্লেষীয় কার্যবর্ণালি বলে।


লাল বর্ণের তরকাদৈর্ঘ্য 650-700mm এবং নীল বর্ণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য 430-


470nm, সেই জন্য বলা যেতে পারে কৃত্রিম আলোতেও সালোকসংশ্লেষ সম্ভব।


যদি সেই আলোর তরফাদৈর্ঘ্য 430-700nm -র মধ্যে হয়।


• গুৰুত্ব / ভূমিকা :


(i) সূর্যালোকের ফোটন কণা গ্রহণ করে ক্লোরোফিল সক্রিয় হয়ে জলকে Her এবং O তে বিশ্লিষ্ট করে। এই H+ আয়ন CO-কে বিজারিত করে গ্লুকোজ গঠনে সাহায্য করে।


(ii) সৌরশক্তির সাহায্যে ADP (অ্যাভিনোসিন ভাই ফসফেট) অজৈব ফসফেটের (pi) সঙ্গে যুক্ত হয়ে উচ্চ শক্তিসম্পন্ন যৌগ ATP (অ্যাডিনোসিন ট্রাই ফসফেট) গঠন করে।


রাত্রে সালোকসংশ্লেষ হয় না 2-


সূর্যালোকের ফোটন কণা গ্রহণ করে ক্লোরোফিল সক্রিয় ও তেজোময় হয়ে জলকে বিশ্লিষ্ট করে। সূর্যালোকের বা নির্দিষ্ট তরকাদৈর্ঘ্যের আলোর ফোটন কণার অনুপস্থিতিতে ক্লোরোফিল সক্রিয় হতে পারে না ফলে জলের বিশ্লেষণ ঘটে না। এই কারণে রাত্রে সালোকসংশ্লেষ হয় না।



উপাদান। একমাত্র ক্লোরোফিলই সূর্যালোকের উদৃশ্য উচ্চ তড়িৎচুম্বকীয় কণা বা ফোটন কণা শোষণ করতে পারে। ক্লোরোফিল কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন এবং ম্যাগনেসিয়াম দ্বারা গঠিত।


উৎস (Source) :


উদ্ভিদের সবুজ অংশের ক্লোরোপ্লাসটিতের প্রাণার থাইলাকয়েড পর্দার ভিতরের গাত্রের লিপিড অংশে ক্লোরোফিল অণুগুলি একস্তরে সজ্জিত থাকে।


(1) ক্লোরোফিল সূর্যালোকের ফোটন কণা গ্রহণ করে সক্রিয় হয়ে জলকে H e এবং O তে ভেঙ্গে দেয়।


* (ii) আলোকশক্তিকে শর্করা খাদ্যে রাসায়নিক শক্তিরূপে আবদ্ধ হতে সাহায্য করে।


উদ্ভিদের মূলে সালোকসংশ্লেষ হয় না :- উদ্ভিদের মূল মাটির নীচে থাকায় সূর্যালোক পায় না এবং উদ্ভিদের মূলে সালোকসংশ্লেষকারি রঞ্জক পদার্থ ক্লোরোফিল না থাকায় উদ্ভিদের মূলে সালোকসংশ্লেষ হয় না। তবে পরাশ্রয়ী উদ্ভিদের মূল (যেমন : অর্কিড) এবং গুলম্বের আধীকরণ: মূলে ক্লোরোফিল থাকায় এবং সূর্যালোক পাওয়ায় সেখানে সালোকসংশ্লেষ হয়।


সালোকসংশ্লেষের স্থান :


ক্লোরোপ্লাস্টযুক্ত সজীব কোশ মাত্রই সালোকসংশ্লেষে সক্ষম। তবে উচ্চশ্রেণির উদ্ভিদের ক্ষেত্রে সবুজ পাতার মেসোফিল কলার কোশ সালোকসংশ্লেষের প্রধান স্থান। পাতা ছাড়া অপরিণত কাণ্ডের সবুজ অংশে, ফুলের সবুজ বৃত্ত এবং বৃত্তিতে, অপক ফলের ফলত্বকে, অর্কিডের সবুজ বায়বীয় মূলে, গুলম্বের আত্তীকরণ মূলে ক্লোরোপ্লাস্টযুক্ত কোন থাকায় এইসব স্থানেও সালোকসংশ্লেষ হয়। এছাড়া নীলাভ সবুজ শৈবাল, এককোশি প্রাণি ক্রাইস্যামিবা, ইউগ্লিনা প্রভৃতির দেহে ক্লোরোফিলের ন্যায় রঞ্জক পদার্থ থাকায়, এরাও সালোকসংশ্লেষে সক্ষম।


বিপর্দাবৃত ক্লোরোপ্লাস্টে স্ট্রোমা এবং গ্রানা নামক দুইটি অংশ বর্তমান। ক্লোরোপ্লাস্টের গ্রানা অংশে আলোক বিক্রিয়া এবং স্ট্রোমা অংশে অন্ধকার বিক্রিয়াগুলি সংঘটিত হয়। সালক সংশ্লেষে মেসোফিল কলার গুরুত্ব :


পাতার উর্ধ্বত্বক এবং নিম্নত্বকের মধ্যে অবস্থানকারী ক্লোরোফিলযুক্ত কোশ দ্বারা গঠিত প্যারেনকাইমা বলাকে মেসোফিল কলা বলে। বিষস্পষ্ট পাতার ক্ষেত্রে মেসোফিল কলা দু'রকমের প্যারেনকাইমা বলা যারা গঠিত প্যালিসেড প্যারেনকাইমা ও স্পঞ্জী-প্যারেনকাইমা। 


সালোকসংশ্লেষের তাৎপর্য :


* (i) সালোকসংশ্লেষে সৌরশক্তির স্পৈতিক শক্তিতে রূপান্তর এবং খাদ্যে


আবদ্ধকরণ :-


জীবের প্রতিটি জৈবনিক কার্যের জন্য প্রয়োজন শক্তির জীবজগতের ক্ষেত্রে এই শক্তির মূল উৎস হল সৌরশক্তি। ক্লোরোফিল যুক্ত সজীব কোশ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পৃথিবীতে আপতিত সৌরশক্তির কিছু অংশকে (প্রায় 0.1%) স্থৈতিক শক্তিতে রূপান্তরিতকরে শর্করা জাতীয় খাদ্যে আবদ্ধ করে। পরবর্তীক্ষেত্রে এই শর্করা জাতীয় খাদ্য উপাদান

থেকে অন্যান্য খাদ্য উপাদান সংশ্লেষিত হয়। এই পরিবর্তিত সৌরশক্তি প্রাণীজগত খাদ্য

গ্রহণের মাধ্যমে সংগ্রহ করে, যা দেহকোশে জারণের মাধ্যমে গতিশক্তি রূপে মুক্ত হয়।

এবং এই শক্তির দ্বারা প্রাণের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন কার্য সম্পন্ন হয়।

মৃতজীবের দেহের বিভিন্ন জৈব পদার্থে আকন্দ স্থৈতিক শক্তিকে বিয়োজক সংগ্রহ করে

নিজ দেহের বিভিন্ন কার্য সম্পন্ন করে। আবার অনেকসময় মৃত জীবের দেহে সংরক্ষিত

দৈহিক শক্তি বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস প্রভৃতিতে


পরিণত হয়, যা মানবসমাজের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার জন্য প্রয়োজন। * (ii) সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াজাত গ্লুকোজের শ্বেতসারে রূপান্তর এবং বিভিন্ন

সমুখী অঙ্গে তার পরিবহন

সালোকসংশ্লেষের মাধ্যমে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। দিনেরবেলায় কোশে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে গেলে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাই গ্লুকোজ থেকে জল বিয়োজিত হয়ে স্টার্চ গঠিত হয়। রাত্রিবেলায় শ্বেতসার বা স্টার্চ ডায়াস্টেজ উৎসেচকের প্রভাবে পুনরায় গ্লুকোজে পরিণত হয় এবং কোশের বিভিন্ন বিপাকীয় কাজে লাগে। অতিরিক্ত গ্লুকোজ অ্যামাইলেজ উৎসেচকের সাহায্যে জল বিয়োজিত হয়ে শ্বেতসারে পরিণত হয় এবং ভবিষ্যতের জন্য উদ্ভিদের বিভিন্ন সঞ্চয়ী অঙ্গে (যেমন- দানাশস্য, মূল, ভু-নিম্নস্থ কাণ্ড) জমা থাকে। এছাড়া উদ্ভিদ নিজ দেহের বিপাকের স্বার্থে গ্লুকোজের সাথে বিভিন্ন মৌল যুক্ত করে প্রোটিন, ফ্যাট ইত্যাদি সংশ্লেষ করে।

About the Author

Hello Friends, welcome to our website Daily GK Career , founded on 27 April 2023 by Sandip Sanki. Daily GK Career is a free professional Education platform where we provide Free online mock test, govt exam, WBCS, RAIL, GROUP D, BANK, POST Office, …

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.