WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

সংরক্ষণ কাকে বলে? জল সংরক্ষণ, মৃত্তিকা সংরক্ষণ সম্বন্ধ্যে আলোচনা করো। (Conservation, water conservation, soil conservation)

ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্রের সজীব এবং জড় উপাদানগুলি পরস্পর নিবিড়ভাবে অন্তঃসম্পর্কিত হয়ে প্রকৃতিতে নিজেদের ভারসাম্য রক্ষা করে। জনবিস্ফোরণের কারণে

সংরক্ষণ কাকে বলে? জল সংরক্ষণ, মৃত্তিকা সংরক্ষণ সম্বন্ধ্যে আলোচনা করো।

ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্রের সজীব এবং জড় উপাদানগুলি পরস্পর নিবিড়ভাবে অন্তঃসম্পর্কিত হয়ে প্রকৃতিতে নিজেদের ভারসাম্য রক্ষা করে। জনবিস্ফোরণের কারণে প্রকৃতিক সম্পদের অপব্যবহারের ফলে এই প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক সম্পদের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ায় বন্যা, খরা, ভূমিক্ষয়, খাদ্যের ঘাটতি, বায়ুতে তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি, বিভিন্নপ্রকার মহামারি রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে। মানুষের অস্তিত্বরক্ষার জন্যই বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের বিজ্ঞানসম্মত ব্যবহার রক্ষণাবেক্ষণ, প্রয়োজনে পুনঃস্থাপন করার একান্ত দরকার।

সংরক্ষণ কাকে বলে? জল সংরক্ষণ, মৃত্তিকা সংরক্ষণ সম্বন্ধ্যে আলোচনা করো।
সংরক্ষণ 



সংরক্ষণ কাকে বলে?

যে পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক সম্পদকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গীর সাহায্যে সুপরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা হয় এবং অপব্যবহার ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা হয়, প্রয়োজনে পুনঃস্থাপন করা হয় তাকে সংরক্ষণ বলে।

• প্রাকৃতিক সম্পদের শ্রেণিবিন্যাস প্রাকৃতিক সম্পদকে সাধারণত দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয় (1) পুনরুজ্জীবনযোগ্য

প্রাকৃতিক সম্পদ, (2) অপুনরুজ্জীবনযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ। * (1) পুনরুজ্জীবনযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ : যে সকল প্রাকৃতিক সম্পদকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব, তাদের পুনরুজ্জীবনযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। উদাহরণ- মাটি, জল, বিভিন্ন প্রকার প্রাণী এবং উদ্ভিদ।

* (2) অপুনরুজ্জীবনযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ : যে সকল প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণ প্রকৃতিতে সুনির্দিষ্ট হওয়ায় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয় না, তাদের অপুনরুজ্জীবনযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ বলে। যেমন কয়লা, খনিজ তেল, খনিজ পদার্থ (তামা, লোহা প্রভৃতি), প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি

সংরক্ষণের গুরুত্ব সংরক্ষণের প্রধান গুরুত্বগুলি নিম্নে আলোচিত হল— ক) সংরক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্য হল পরিবেশে অজীব ও জীবজ উপাদানগুলির প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করা। * (mn) প্রাকৃতিক সম্পদের বিজ্ঞানভিত্তিক সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের কল্যানসাধন

ও দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করা। * juir) প্রকৃতিতে লুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ ও প্রাণীদের অস্তিত্ব রক্ষা করা।

এই প্রাকৃতিক সম্পদকে অপব্যবহার এবং ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা।

 জল সংরক্ষণ 

বন্যা এবং খরা দুটি বিপরীতমুখী প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্রকৃতিতে জলের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। খরার সময় জলের অভাবে যেমন জীবের মৃত্যু ঘটে তেমনি বন্যার সময় অতিরিক্ত জলের প্লাবনে ভূমিক্ষয়, স্বাদু জলের অপচয় এবং জীবের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া অন্যান্য কারণে মানুষের দ্বারা স্বাদু জলের অপচয় ও জলের | দূষণ ঘটে, ফলে প্রকৃতিতে জলের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। মানুষ এবং অন্যান্য জীবের জীবন ধারনের জন্য জলই অন্যতম উপাদান। জীবনধারণের প্রয়োজন ছাড়াও অন্যান্য কারণেও যেমন—কৃষিকার্য, মৎস্য চাষ, কল-কারখানায় এবং দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ জল ব্যবহার করে। মানুষ প্রধানত স্বাদু বা মিষ্টি জল ব্যবহার করে বলে, জল সংরক্ষণ বলতে স্বাদু বা মিষ্টিজলের সংরক্ষণ বোঝায়।

• জল সংরক্ষণের উদ্দেশ্য বা গুরুত্ব : জল সংরক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্যগুলি নিম্নরূপ- * (i) প্রকৃতিতে জলের ভারসাম্য বজায় রেখে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করা। * (ii) উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের খরার প্রকোপ থেকে রক্ষা করা। * (iii) জল সংরক্ষণের মাধ্যমে পানীয় জল এবং কৃষিকার্যের জন্য জলের সরবরাহ

অব্যাহত রাখা। (iv) মানুষের দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় জলের সরবরাহ অব্যাহত রাখা।

• জল সংরক্ষণের পদ্ধতি বা উপায় : মানুষের ব্যবহারযোগ্য স্বাদু বা মিষ্টি জল সংরক্ষাণের উল্লেখযোগ্য পদ্ধতিগুলি নিম্নে আলোচিত হল ---

i) বাঁধ নির্মাণ : বিভিন্ন নদীর গতিপথে বাঁধ দিয়ে বাঁধের পেছনে জলাধার সৃষ্টি করে, বর্ষার সময় অতিরিক্ত জলকে ধরে রাখা হয়। এর ফলে বর্ষাকালে নদী উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে প্লাবন রোধ করা সম্ভব হয় এবং গ্রীষ্মকালে জলাভাবের সময় প্রয়োজন। অনুযায়ী জল সরবরাহ করা হয়।

* (ii) জলাশয় খনন : বিভিন্ন অঞ্চলে জলাশয় সৃষ্টি করে বৃষ্টির জল ধরে রেখে। জলাভাবের সময় ওই জল ব্যবহার করা হয় ফলে নদ-নদী এবং ভূগর্ভস্থ জলের ওপর নির্ভরতা কমে যায় এবং জল সংরক্ষণ সম্ভব হয়।

* (iii) বনাগুল সৃষ্টি : নগ্ন মাটি বেশি জল ধরে রাখতে পারে না, ফলে বর্ষার সময় অতিরিক্ত জল নদীতে পড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। পাহাড় ও নদ-নদী সংলগ্ন অঞ্চলে বনাঞ্চল সৃষ্টি করলে উদ্ভিদের মূল অংশ মালির কণাগুলিকে দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ করে, ফলে বর্ষায় অতিরিক্ত জলকে মাটিতে ধরে রাখা সম্ভব হয়।

- (iv) মৃত্তিকা কৰ্মণ : উপযুক্ত পদ্ধতিতে মৃত্তিকা কর্ষণ করলে, কর্ষিত আলগা মৃত্তিকা বর্ষার সময় জল শোষণ করে মাটিতে জলের প্ররিমাণ বৃদ্ধি করে।

* (v) পরিমিত ব্যবহার চাষের সময় প্রয়োজনের বেশি জল ব্যবহার না করে জল

সংরক্ষণ করা যায়।

* (vi) আগাছা নির্মূল : চাষের জমির আগাছা ধ্বংস করে আগাছা দ্বারা জল শোষণ

রোধ করে জল সংরক্ষণ করা যায়।

* (viii) জল শোধন : উপযুক্ত পদ্ধতিতে কল-কারখানার এবং শহরের পয়ঃপ্রণালীর জল শোধন করে নদী-নালাতে ফেলে এবং কৃষি জমিতে কীটনাশক পদার্থের ব্যবহার।

কমিয়ে জল সংরক্ষণ করা যায়।

 মৃত্তিকা সংরক্ষণ 

ভূত্বকের উপরিভাগে ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব পদার্থ দ্বারা গঠিত কোমল শিলাস্তরকে মাটি বা ভূমি বলে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণ যথা—বন্যা, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতির জন্য ভূমিক্ষয় হয়, আবার একই জমিতে একইপ্রকার ফসলের বারবার চাষ, অবৈজ্ঞানিক উপায়ে ভূমিকর্ষণ, বনজ ও কৃষিজ সম্পদের আহরণ, মানুষের অপরিকল্পিতভাবে বসতি স্থাপনের জ শহরের বিস্তৃতি প্রভৃতি মানুষ যারা সৃষ্ট কৃত্রিম কারণেও ভূমিক্ষয় হয়।

অপরপক্ষে জীবজগৎ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মাটির ওপর নির্ভরশীল। স্থলজ সজীব গোষ্ঠী মাটি থেকে খাদ্য উপাদান সংগ্রহ করে খাদ্য প্রস্তুত করে এবং পরভোজী জীবগোষ্ঠী এই খাদ্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংগ্রহ করে। এছাড়াও জীবজগৎকে ধারণ করে রাখে মাটি। সুতরাং ভূমিক্ষয় হলে জীবজগতের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। জীবজগতের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজন।

• মৃত্তিকা সংরক্ষণের উদ্দেশ্য : মৃত্তিকা সংরক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হল-

*(1) দেশের বনজ সম্পদকে রক্ষা করার জন্য মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। * (2) চাষ-আবাদের জন্য মৃত্তিকার উর্বরাশক্তি বজায় রাখার প্রয়োজনে মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

* (3) স্থলজ জীবের বাসস্থান এবং যানবাহন চলাচলের জন্য নির্মিত রাস্তাঘাটগুলোকে অটুট রাখার জন্য মৃত্তিকা সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

* (4) বন্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মৃত্তিকা সংরক্ষণ প্রয়োজন।
মুত্তিকা সংরক্ষণের উপায় বা পদ্ধতি : মৃত্তিকা সংরক্ষণের উপায়গুলিকে প্রধানত

(ii) মাটির ক্ষয়রোধ।

এটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়, যথা (1) মাটি বা ভূমির উর্বরতা শক্তির পুনরুদ্ধার। (I) মাটি বা ভূমির উর্বরতা শক্তির পুনরুদ্ধার মাটির উর্বরতা শক্তির পুনরুদ্ধার

প্রধানত নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলির মাধ্যমে করা হয়- * (i) শস্যের আবর্তন : একই প্রকার ফসল একই জমিতে বার বার চাষ না করে বিভিন্ন প্রকার ফসল বছরের বিভিন্ন ঋতুতে পর্যায়ক্রমিকভাবে (Crop rotation) চাষ করলে জমির উর্বরতা শক্তি সংরক্ষিত থাকে। যদি কোনো জমিতে ধান চাষ বারবার করা হয়, তাহলে ওই জমিতে ওই উদ্ভিদের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক উপাদানের পরিমাণ কমে যায়। ধান চাষের পর ডাল জাতীয় শস্যের চাষ করলে জমির উর্বরতা শক্তি সংরক্ষিত থাকে কারণ ডাল জাতীয় শস্যের মূলে বসবাসকারী মিথোজীবী ব্যাকটিরিয়া রাইজোবিয়াম মাটিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। * (ii) মাটিতে সার প্রয়োগ : মাটি প্রতিবার কর্ষণের সময় উপযুক্ত পরিমাণে জৈব (যেমন

গোবর) বা অজৈব সার (যেমন – ইউরিয়া) প্রয়োগ করলে জমির উর্বরতা শক্তি বজায় থাকে। * (iii) ঝুম চাষ : সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় এই প্রথায় একই জমিতে বারবার চাষ না করে, বন-জঙ্গল কেটে নতুন জমিতে চাষ করা হয়, এবং পুরাতন জমি পুনরায়

অরণ্যে পরিণত হয়, ফলে জমির উর্বরতা শক্তির পুনরুদ্ধার হয়। (iv) শিম্বগোত্রীয় উদ্ভিদের চাষ : শিম্বগোত্রীয় উদ্ভিদের মূলে রাইজোবিয়াম নামক

মিথোজীবী ব্যাকটিরিয়া থাকে, এই ব্যাকটিরিয়া বায়ুর নাইট্রোজেনকে নিজের দেহে আবদ্ধ করে, মাটিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, ফলে মাটি উর্বর হয়।

(II) মাটির ক্ষয় বা ভূমিক্ষয় রোধ করা মাটির ক্ষয় রোধ প্রধানত নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলির মাধ্যমে করা হয়- * (1) বৃক্ষ রোপণ : বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে (যথা--বৃষ্টির জল, বায়ুপ্রবাহ)
ভূমিক্ষয় যাতে না ঘটে, সেইজন্য নির্দিষ্ট প্রকারে উদ্ভিদ রোপণ করে বনাঞ্চল সৃষ্টি করা হয়। আবার মৃত্তিকা ধারক উদ্ভিদ যথা— দূর্বা ঘাস, মুথা ঘাস প্রভৃতি লাগিয়ে ভূমিক্ষয়
নিবারণ করা হয়।

* (2) সোপান চাষ বা ধাপ চাষ : পার্বত্য ঢালু জমিতে সিঁড়ি বা সোপান আকারে ধাপ তৈরি করে চাষ করলে বৃষ্টির ফলে ঢালু জমির ক্ষয়রোধ করা সম্ভব হয়। * (3) বৃক্ষচ্ছেদ নিবারণ : অপ্রয়োজনে গাছপালা কেটে ফেলা বন্ধ করা। কারণ
উদ্ভিদের মূল মাটির কণাগুলিকে শক্তভাবে আবদ্ধ করে ভূমিক্ষয় রোধ করে। * (4) বাঁধ নির্মাণ : সঠিকভাবে নদ-নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভূমিক্ষয় রোধ করা সম্ভব। * (5) বিজ্ঞানসম্মতভাবে ভূমি কর্ষণ এবং সারিবদ্ধ চাষ পদ্ধতির মাধ্যমে ভূমিক্ষয়
রোধ করা যায়।

 উপসংহার

ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্রের সজীব এবং জড় উপাদানগুলি পরস্পর নিবিড়ভাবে অন্তঃসম্পর্কিত হয়ে প্রকৃতিতে নিজেদের ভারসাম্য রক্ষা করে। জনবিস্ফোরণের কারণে প্রকৃতিক সম্পদের অপব্যবহারের ফলে এই প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক সম্পদের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ায় বন্যা, খরা, ভূমিক্ষয়, খাদ্যের ঘাটতি, বায়ুতে তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি, বিভিন্নপ্রকার মহামারি রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে। মানুষের অস্তিত্বরক্ষার জন্যই বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের বিজ্ঞানসম্মত ব্যবহার রক্ষণাবেক্ষণ, প্রয়োজনে পুনঃস্থাপন করার একান্ত দরকার।



About the Author

Hello Friends, welcome to our website Daily GK Career , founded on 27 April 2023 by Sandip Sanki. Daily GK Career is a free professional Education platform where we provide Free online mock test, govt exam, WBCS, RAIL, GROUP D, BANK, POST Office, …

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.