ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের লখনউ অধিবেশন - Lucknow Session of the Indian National Congress (1916)
1916 সালের লখনৌ অধিবেশন ভারতের ইতিহাসে একটা বিশেষ সময়। এখানে ৫০,০০০ প্রতিনিধি এসেছিল, যা তখন অস্বাভাবিক ছিল। এই অধিবেশন হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপন, স্বাধীনতা দাবি এবং হোমরুল আন্দোলনের শুরু করেছিল।
হোমরুল লীগের প্রভাব এবং এনি বেসান্ট ও বালগঙ্গাধর তিলকের অবদান লখনৌ অধিবেশনকে ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ক করেছিল। এই সম্মেলনে ভারতীয় মুসলিম লীগ এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে সম্মিলিত হয়েছিল।
প্রধান বিষয়সমূহ:
- লখনৌ অধিবেশনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী
- হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রথম ধাপ
- স্বরাজ্য দাবি এবং হোমরুল আন্দোলনের সূচনা
- ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যকার ঐতিহাসিক চুক্তি
- এনি বেসান্ট ও বালগঙ্গাধর তিলকের ভূমিকা
ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় - Lucknow Session of the Indian National Congress (1916)
১৯১৬ সালের Lucknow অধিবেশন ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল। হোমরুল লীগ এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এক সুপারিশ করেছিল। এটা ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে একটি মাইলফলক ছিল।
হোমরুল লীগের প্রভাব
হোমরুল লীগ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংগঠন। এটি ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে এগিয়ে দিয়েছিল। এই লীগ ভারতের প্রধান অঞ্চলগুলোকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার দাবি করেছিল।
এনি বেসান্ট ও বালগঙ্গাধর তিলকের অবদান
এনি বেসান্ট এবং বালগঙ্গাধর তিলক হোমরুল আন্দোলনে কাজ করেছিলেন। তাদের সমর্থন ও প্রচেষ্টার ফলে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ একযোগে এক সুপারিশ করতে সক্ষম হয়েছিল।
এনি বেসান্ট ও বালগঙ্গাধর তিলক ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁরা হোমরুল আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যান এবং স্বরাজ্য দাবির পক্ষে কাজ করেন।
স্বরাজ্য প্রস্তাব ও বিপিন চন্দ্র পালের নন-কো-ওপারেশন আন্দোলন
১৯১৬ সালে লখনৌ অধিবেশনে বিপিন চন্দ্র পাল ভারতের স্বাধীনতার দাবি করেন। এটা ছিল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি নন-কো-ওপারেশন আন্দোলন চালু করে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়েন।
উপনিবেশিক মুক্তি আন্দোলনের একটি নতুন দিগন্ত
নন-কো-ওপারেশন আন্দোলন ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক যোগ করে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বিপিন চন্দ্র পাল ভারতের উপনিবেশিক মুক্তি আন্দোলনকে নতুন দিক দিয়েছেন। এই আন্দোলন ব্রিটিশ শাসনকে নড়ে চড়ে দিয়েছিল।
উপনিবেশিক মুক্তি আন্দোলনের পরিবর্তে নন-কো-ওপারেশন আন্দোলন অহিংস এবং সমাজ ভিত্তিক কর্মসূচি দিয়েছিল। এটি ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে একটি নতুন চিন্তাধারার সূচনা করেছিল।
লখনৌ অধিবেশন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস (১৯১৬): সাম্প্রদায়িকতার প্রাথমিক পর্যায়
লখনৌ অধিবেশনে, ভারতীয় জাতীয়তাবাদীরা হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপনের চেষ্টা করেছিলেন। এই প্রচেষ্টা ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের শুরুতে সাম্প্রদায়িকতার প্রাথমিক পর্যায়ের সূচনা ছিল। কিন্তু, পরবর্তীকালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ-এর উদ্যোগে, মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের মধ্যে বিভাজন হয়ে উঠেছিল।
হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপনের চেষ্টা করা হলেও, পরবর্তী পর্যায়ে লুসি ইন এবং মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ-এর ভূমিকা ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছিল।
লখনৌ অধিবেশনের ঘটনাচক্র থেকে দেখা যায়, একটি জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে সাম্প্রদায়িকতার উদ্ভব হতে পারে। এই প্রাথমিক পর্যায়ের সাম্প্রদায়িকতা পরবর্তীতে আরও সংঘাতমূলক রূপ নেয়।
FAQ
কখন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের লখনৌ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল?
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের লখনৌ অধিবেশন ১৯১৬ সালের ডিসেম্বরে হয়েছিল।
লখনৌ অধিবেশনে কী গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল?
লখনৌ অধিবেশনে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপন হয়েছিল। এটি স্বরাজ্য দাবি ও হোমরুল আন্দোলনের সূচনা করেছিল। এখানে এনি বেসান্ট ও বালগঙ্গাধর তিলক হোমরুল আন্দোলনে কাজ করেছিলেন।
লখনৌ অধিবেশনে বিপিন চন্দ্র পালের ভূমিকা কী ছিল?
লখনৌ অধিবেশনে বিপিন চন্দ্র পাল স্বরাজ্য দাবি করেন। তিনি নন-কো-ওপারেশন আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসন প্রতিরোধের আহ্বান জানান। এটি ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি নতুন দিগন্ত খুলে দেয়।
লখনৌ অধিবেশনে সাম্প্রদায়িকতার কী প্রভাব পড়েছিল?
লখনৌ অধিবেশনে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য স্থাপনের চেষ্টা হয়েছিল। পরে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ-এর উদ্যোগে মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের মধ্যে বিভাজন হয়। এটি ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে সাম্প্রদায়িকতার প্রাথমিক পর্যায়ের শুরু ছিল।